লিভার রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

 কেউ যদি লিভার রোগের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে লিভারের রোগীরা কি খাবেন, কি খাবেন না এটা নিয়ে সমস্যায় পড়েন।  লিভারের রোগীর খাবার এবং লিভার রোগীর খাদ্য তালিকা আর্টিকেল এর মধ্যে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

লিভার রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার


লিভারের রোগের লক্ষণ



আপনার চোখ হলদে হয়

লিভার রোগী চোখ যদি হলদে হয় তাহলে এটা একটা উপসর্গ ইন্ডিকেট করে যে লিভার ঠিকমত কাজ করছে না , এটি লিভার বা যকৃত এর রোগের সবচেয়ে নির্দিষ্ট উপসর্গ। বিলিরুবিন নামের একটা পদার্থ, এটা সাধারনত হলুদ রঙের হয়ে থাকে। যদি একটা মানুষের স্বাভাবিক লিভার বা যকৃত থাকে তাহলে সেটা লিভার এর মাধ্যমে অপসারিত হয়ে থাকে। আর যদি লিভার ঠিকভাবে তার কাজ না করতে পারে সেক্ষেত্রে এই শরিলের বিলিরুবিন সঞ্চিত হয়ে চোখের সাদা অংক হলুদ হয়ে যায়।

পেট ফুলে যায়

আপনার পেট যদি ফুলে যায় এবং আপনার পেট ফুলা যদি না কমে তাহলেও অনেক ক্ষেত্রে লিভার এর সমস্যা হতে পারে। তাই যদি আপনার পেট ফুলেই থাকে আর না কমে তাহলে অতি তাড়াতাড়ি ডক্টর এর পরমর্শ নিন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় লিভার কাজ করা বন্ধ করে দিলে পেটে পানি জমে থাকে, এই সমস্যাটাও হয়ে থাকে লিভার এর সমস্যা এর কারণে।

হেপাটাইটিস এ, বি অথবা সি

ভাইরাস বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়ে লিভার কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।  লিভারের ইনফেকশন অথবা লিভার কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পিছনে সবচেয়ে বেশি কলকাঠি নারে এই হেপাটাইটিস ভাইরাস।

আক্রান্ত ব্যাক্তি মলের সংস্পর্শে আসলে অথবা দূষিত পরিবেশে থাকলে হেপাটাইটিস এ রোগ সবচেয়ে বেশি ছড়ায়।  আবার হেপাটাইটিস বি এবং সি হেপাটাইটিস রোগীর রক্তের সংস্পর্শে অথবা যৌন মিলন এর মাধ্যমে ছড়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই।

হেপাটাইটিস সি এর ভালো চিকিংসা রয়েছে। লিভারের কোন সমস্যা হলে রোগীর এই ধরণের রোগ নির্নয়ের জন্য টেস্ট রয়েছে যে টেস্ট এর মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা যায় যে রোগীর আসলে হেপাটাইটিস ভাইরাস আছে কি নাই?

অতিরিক্ত ওজন কিংবা স্থূলতা 

অতিরিক্ত ওজন হলে আপনাকে আয়নায় যতটা না খারাপ দেখা যায় তার চেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা হয় আপনার ভিতরের শরীলে। বেশিরভাগ চল্লিশ এর বেশি মানুষ  নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এর কারণে ভুগে। মানে মানুষের বয়স একটু বেশি হয়ে গেলে এই রোগটা বৃদ্বি পায়। 

নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এর ফলে মানুষের শরীলের লিভারে ফ্যাট জমে। এর ফলে বিভিন্ন ইনফেকশন অথবা লিভার সিরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পরিবারের কারোও লিভার এর সমস্যা থাকলে

আপনার পরিবারের যদি কারও লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে অথবা লিভার রোগের কারণে ক্যান্সার হয়ে মারা যায়, এমন যদি হয়ে থাকে তাহলে ডাক্টারকে অবগত করুন। কারণ যাদের ফ্যামিলিতে সমস্যা থাকে তাদের এই রোগ বিস্তার করার প্রবনতা বেশি থাকে।

অতিমাত্রায় মদ্যপান

আপনি যদি অতিমাত্রায় মধ্যপান করে থাকেন তাহলে আপনার লিভার রোগ হয়ে যাওয়ার চান্স বেশি। এর কয়েকটি কারণ রয়েছে। লিভার আমাদের শরীল থেকে দূষিত কেমিক্যাল ও টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এখন আপনি যদি অতিরিক্ত আলকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার লিভার অতিরিক্ত কার্য সম্পাদন করবে। এর ফলে অতি তাড়াতাড়ি লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়ার চ্যান্স থাকে।



লিভার রোগের প্রতিকার


ওজন নিয়ন্ত্রণ করা

ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের উপায় হলো আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করা। আপনার ওজন যদি নিয়ন্ত্রণ করেন তাহলে ডায়বেটিস, কোলেস্টরল এগুলো ঠিক হয়ে যাবে । এর ফলে আপনার ফ্যাটি লিভার এর যে সমস্যা সেটা দূর হয়ে যাবে। লিভারে ফ্যাট জমতে পারবে না।

আপনি সব সময় খেয়াল রাখবেন যেই পরিমানে খাচ্ছেন, সেই পরিমানে যেন পরিশ্রম করেন। তাহলে ফ্যাট জমার চ্যান্স থাকবে না। এবং সব সময় সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।


কায়িক পরিশ্রম

নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করুন। আপনি চাইলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন অথবা আপনি খেলাধুলা করতে পারেন। তাহলে আপনার শরীলে কোলেস্টরল জমার চ্যান্স থাকবে না। এই পদ্বতিতেও ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করা সম্ভাব।

লেবুপানি 

লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি। তাই লেবু খাওয়া শরীলের লিভার সহ প্রায় সব অজ্ঞের জন্যই উপকার। লেবু লিভারকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

পেপে 

পেপে লিভারে জন্য খুবই ভালো একটা খাবার। পেঁপেতে থাকা ড্যানডেলিওন, মিল্ক থিসল লিভার সতেজ রাখে। এর ফলে আপনার লিভার সুস্থ থাকে। তাই যেসব লিভারের রোগীরা আছেন তারা নিয়মিত পেপে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

Post a Comment

Previous Post Next Post